স্পোর্টস ডেস্ক: সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ওঠা অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে বোর্ড। শনিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিসিবি তাদের অবস্থান পরিষ্কার করে জানায়, আর্থিক সিদ্ধান্তগুলো নিয়ম মেনেই নেওয়া হয়েছে এবং এতে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিসিবি জানায়, তারা দেশের স্বীকৃত এবং তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তর করেছে। একই সঙ্গে, এসব ব্যাংক উচ্চ সুদের হার প্রদান করায় অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার কৌশল হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এছাড়া, প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এই আর্থিক কার্যক্রমে বিসিবির সভাপতি ফারুক আহমেদ স্বাক্ষরকারী নন। বরং, বোর্ডের দুই পরিচালক ফাহিম সিনহা এবং মাহবুবুল আনাম যথাযথ কর্তৃপক্ষ হিসেবে এই সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর দিয়েছেন। বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা সবসময় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নীতিতে বিশ্বাসী এবং ভবিষ্যতেও একইভাবে কাজ চালিয়ে যাবে।
বিসিবি তাদের আর্থিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে সাধারণ জনগণ ও সাংবাদিকদের জন্য বেশ কিছু তথ্য স্পষ্ট করে তুলে ধরে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের আগস্টে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর ফারুক আহমেদ বোর্ডের আর্থিক স্বার্থ রক্ষা করাকে অগ্রাধিকার দেন। দেশের অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং পূর্ববর্তী বছরগুলোর আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে বোর্ড সিদ্ধান্ত নেয় শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গ্রিন ও ইয়েলো জোনে শ্রেণিবদ্ধকৃত ব্যাংকের সঙ্গেই আর্থিক সম্পর্ক রাখার।
এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, ২৫০ কোটি টাকা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে, এর মধ্যে ২৩৮ কোটি টাকা নিরাপদ ব্যাংকে পুনঃবিনিয়োগ করা হয়। বাকি ১২ কোটি টাকা দৈনন্দিন ব্যয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়।
বিসিবি স্পষ্ট করে জানায়, এসব সিদ্ধান্তে সভাপতি এককভাবে কোনো ভূমিকা রাখেননি। আর্থিক লেনদেনে স্বাক্ষর প্রদানকারী দুই পরিচালক হলেন অর্থ কমিটির চেয়ারম্যান ফাহিম সিনহা এবং টেন্ডার ও ক্রয় কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল আনাম। প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ এসব বিষয়ে স্বাক্ষরকারী নন।
বোর্ড আরও দাবি করে, একটি অপতৎপর গোষ্ঠী-যারা ক্রিকেট প্রশাসনের ভেতরে ও বাইরে সক্রিয় বা ইচ্ছাকৃতভাবে এই অপপ্রচার চালাচ্ছে।
বিসিবি জানায়, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তারা ১৩টি ব্যাংকের সঙ্গে তহবিল এবং স্থায়ী আমানতের দায়িত্ব বণ্টন করেছে। এর ফলে শুধু আর্থিক নিরাপত্তা নয়, আগের তুলনায় ২–৫ শতাংশ বেশি সুদ অর্জিত হয়েছে।
তাছাড়া, চলতি বছরের গত ছয় মাসে বিসিবি ব্যাংকিং অংশীদারদের কাছ থেকে প্রায় ১২ কোটি টাকার পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে এবং অতিরিক্ত ২০ কোটি টাকার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য।
বিসিবি জানায়, তারা সুশাসন ও শৃঙ্খলার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এবং তথ্যভিত্তিক যেকোনো তদন্তকে স্বাগত জানাবে। একই সঙ্গে, গণমাধ্যমকে ভিত্তিহীন ও প্ররোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ না করার আহ্বান জানিয়েছে বোর্ড।