পঞ্চগড় প্রতিনিধি॥পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় এক কলেজ পড়–য়া ছাত্রীকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করে গোপনে ভিডিও ধারণের পর তা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাাকমেইল ও অর্থ নেওয়ার অভিযোগে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা রকিউজ্জামান রকিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাতে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে রকিকে গ্রেপ্তার করে। পরে বুধবার দুপুরে তাকে আদালতের তোলার হয়। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।এর আগে, ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে রকিউজ্জামান রকিকে প্রধান আসামি করে দেবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় রকির বন্ধু মামুনের নাম উল্লেখ সহ আরো দুই-তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। গ্রেপ্তার রকিউজ্জামান রকি উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়নের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দেবীগঞ্জ সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী দেবীগঞ্জ সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। একই শ্রেণির ছাত্র রকিউজ্জামান রকি প্রথমে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে এবং পরে ফেসবুকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে থাকে। প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় রকি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠে। গত বছরের ২৩ অক্টোবর সকালে ‘কম্পিউটার শেখানোর’ কথা বলে কৌশলে ওই ছাত্রীকে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের দোতলায় একটি কক্ষে নিয়ে যায় এবং সেখানেই তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় রকির বন্ধু মামুন গোপনে সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে সেই ভিডিও দেখিয়ে রকি একাধিকবার ব্ল্যাকমেইল করে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে এবং ভীতি দেখিয়ে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে তার কাছ থেকে অর্থ আদায় করে। পরে মেয়েটির নামে একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে সেখানে নগ্ন ছবি আপলোড করে রকি।
সবশেষ ১০ এপ্রিল রকি মেয়েটিকে আবারও শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিয়ে রাজি না হলে ২ লাখ টাকা দাবি করে এবং ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি দেয়। ভুক্তভোগী বিষয়টি নিয়ে কান্নাকাটি করলে পরিবার তা জানতে পারে। পরিবারের সদস্যরা প্রথমে শালডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল ইসলামের কাছে অভিযোগ করেন। চেয়ারম্যান রকির বাবাকে বিষয়টি জানিয়ে ছেলেকে সংশোধনের জন্য সতর্ক করেন। কিন্তু এতে রকি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও ছবি পোস্ট করা অব্যাহত রাখে। একপর্যায়ে নিরুপায় হয়ে মেয়েটির বাবা দেবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।এব্যাপারে দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করার পর তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।