স্পোর্টস রিপোর্টার, সিলেট থেকে: ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম দিনেই অলআউট হয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। পরে বল হাতে সাফল্যের দেখা পাননি নাহিদ রানারা। উইকেটহীন দিন কেটেছে তাদের। শিষ্যদের এমন ব্যর্থতার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। দিয়েছেন আমূল পরিবর্তনের বার্তা। তবে সেজন্য বেশি সময়ও ব্যয় করতে চান না তিনি। যে উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটাররা হামাগুড়ি দিয়েছেন, রান তুলতে রীতিমতো যুদ্ধ করেছেন, একের পর এক বাউন্সে বিধ্বস্ত হয়েছেন, সেই একই উইকেটে অনড় থেকেছেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটাররা। ব্রেসিং মুজারাবানিদের পথ অনুসরণ করতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা।
প্রথম দিনের খেলা শেষে মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘নতুন কিছু করতে চাচ্ছি। আমরা যেন আরো ভালো করতে পারি, সেটি নিয়ে কাজ করছি। যে জায়গাগুলোতে উন্নতি করা দরকার চেষ্টা করছি সেটি নিয়েও। প্রথম দিনে আমাদের ব্যাটিং ভালো হয়নি, বোলিংও ভালো হয়নি। চেষ্টা করছি এই জায়গা থেকে কীভাবে তাড়াতাড়ি ফিরতে পারি।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘টেকনিক্যালি আমরা কিছু ভুল করেছি। সেইসঙ্গে মানসিক কিছু ভুলও ছিল। হঠাৎ করেই আমরা ভুল কিছু শট খেলে ফেলেছি। যখনই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করেছি, তখনই একজন থিত হওয়া ব্যাটার আউট হয়েছেন। আমি মনে করি আমাদের প্রক্রিয়ার মধ্যে ভুল রয়েছে। এটির সমাধান খুব দ্রুতই খুঁজতে হবে।’
গেল এক বছরে ১৭ ইনিংসের মধ্যে ৮টিতে ২০০-এর নিচে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। পাকিস্তান সিরিজের পরে সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি ব্যাটাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজে কিছুটা সফলতা দেখা গেলেও দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের বিপক্ষে হয়েছিল ব্যাটিং ধস। এবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও সেটি দেখা গেল। এই বিষয়ে সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘এই সমস্যাটা ঠিক হবে না, সেটি বলব না। যেন তাড়াতাড়ি ঠিক করতে পারি, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ভুল হতেই পারে, কিন্তু বারবার একই ভুল করলে সেটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।’ ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কার পরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটাররা নাকানিচুবানি খেয়েছেন। এবার সিলেটেও তার ব্যতিক্রম নেই। আগে নিজেদের পছন্দমতো উইকেট বানিয়ে খেলার অভ্যাস ছিল বাংলাদেশের। এখন সেই জায়গা থেকে বের হয়ে এসে স্পোর্টিং উইকেটে খেলার চেষ্টা করছে টাইগার বাহিনী। এই কারণে ঘরের মাটিতে ব্যর্থতা হতে পারে বলে ধারণা করছেন সালাউদ্দিন। তবে স্পোর্টিং উইকেটে কোথায় ভোগান্তি বেশি সেটি খুঁজে বের করে সমাধান করতে চান তিনি।
এ দিকে সিলেট টেস্টের প্রথম দিনে পুরোপুরি সফল হয়েছেন জিম্বাবুয়ের বোলাররা। দলটির পেস বোলিং কোচ হিসেবে রয়েছেন চার্লস কেনেথ ল্যাঙ্গেভেন্ট। ২০১৯ সালে তিনি বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ ছিলেন। দীর্ঘদিন পরে এখানকার ক্রিকেটারদের দেখছেন। তার মতে, ‘অনেক পরিবর্তন এসেছে। নতুন ক্রিকেটাররা এসেছেন। ভালো পেসারদেরও দেখতে পাচ্ছি। আশা করছি, তারা ভালো কিছু করবে। কিন্তু আমরাও চাইব, খেলাটাকে খুব বেশি কঠিন না করতে।’ জিম্বাবুয়েকে নিয়ে ল্যাঙ্গেভেন্ট বলেছেন, ‘ক্রিকেটাররা দারুণ প্রচেষ্টা করেছেন। প্রথম সেশনে সেভাবে জ্বলে উঠতে না পারলেও দ্বিতীয় সেশনে বোলাররা ভালো করেছেন। সবমিলিয়ে ক্রিকেটাররা সুশৃঙ্খল ক্রিকেট খেলেছেন। দারুণ উইকেট ছিল। বাংলাদেশে এমন উইকেট আমি এর আগে কখনো দেখিনি। যাই হোক, এখনও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। ব্লেসিং ঠিকভাবে বাউন্স আদায় করে নিতে পেরেছেন। দলীয়ভাবে যে ক্রিকেট দেখলাম সেটি ধরে রাখতে হবে। শেষ সেশনে ব্যাটিং করাটা চ্যালেঞ্জিং। আমাদের দুই ওপেনার সেই চ্যালেঞ্জ খুব ভালোভাবে পার করেছেন।’