অনলাইন ডেস্ক: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহকে নিয়ে মিথ্যা প্রতিবেদন করেছে দৈনিক প্রথম আলো। শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাতে প্রথম আলোর অনলাইন ভার্সনের ওই প্রতিবেদন নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রথম আলোর এই প্রতিবেদনের পাশাপাশি আগের অনেক প্রতিবেদনের অসঙ্গতি তুলে ধরছেন নেটিজেনরা। অনেকে বলছেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব প্রতিবেদন করে থাকে ট্রান্সকম গ্রুপের মালিকানাধীন দৈনিকটি।
এদিকে, মিথ্যা প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন হাসনাত আব্দুল্লাহও। ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে হাসনাত বলেছেন, ‘প্রথম আলো বারবারই এ দেশের সৎ এবং দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদদের নিয়ে মিথ্যাচার করেছে। ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে যে বা যারাই দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে, তাদেরকেই আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। আমি সেই তালিকার সর্বশেষ সংযোজন।
‘র’-এর বিরুদ্ধে পোস্ট দেওয়ার দুই দিনের মাথায় আমাকে নিয়ে এই তথ্যসন্ত্রাস কাকতালীয় হতে পারে না।’এদিকে, সমালোচনার মুখে প্রথম আলোর ওই প্রতিবেদনে কিছুটা সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম আলোর প্রতিবেদনের প্রথমে শিরোনাম ছিল ‘বিলাসী জীবনসহ নানা প্রশ্নের মুখে সারজিস ও হাসনাত’। বিতর্কের মুখে শিরোনাম পরিবর্তন করে প্রথম আলো লিখেছে, ‘নানা প্রশ্ন ও অভিযোগের জবাব দিলেন নেতারা’।
এ প্রসঙ্গে ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে আলকামা আজাদ নামে একজন লিখেছেন, ‘বিশ্বাস রাখেন এই বিতর্কটা যদি না উঠত, তবে প্রথম আলো শিরোনাম কোনভাবেই পরিবর্তন করতো না। প্রথম আলোর এসব অপসাংবাদিকতা কখনো পরিবর্তন হবে না। প্রথম আলো সাংবাদিকতা করে না, বরং এজেন্ডা ফিট করে রাজনীতি করে। প্রথম আলো চায় সুডো সরকার চালাতে। সাংবাদিকতার নামে এই অপসাংবাদিকতা রুখতে হবে।
অনেক হয়েছে আর হতে পারে না।’আলী নাসের খান নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘হাসনাত আব্দুল্লাহকে নিয়ে প্রথম আলোর উদ্দেশ্যমূলক সংবাদের নিন্দা জানাই। প্রথম আলোর সম্পাদককে মাফ চাইতে হবে। হাসনাত দেশের সম্পদ, আমাদের চোখের মণি, আমাদের নন্দিত নেতা।’
এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইয়াহিয়া জিসান লিখেছেন, ‘প্রথম আলো গং তাদের পুরনো নোংরামি চরিত্র থেকে বের হয়ে আসতে পারছে না। এখন তারা হাসনাত আব্দুল্লাহর পেছনে লেগেছে। পাশের দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী প্রথম আলো গংকে লেনাদেনা বুঝিয়ে দেওয়ার সময় এসেছে।’
এদিকে, হাসনাত আব্দুল্লাহ ফেসবুকে বলেছেন, ‘প্রথম আলো আজ শিরোনাম করেছে ‘হাসনাতের বিলাসী জীবনযাপন নিয়ে প্রশ্ন’। আমি প্রথম আলোর সেই সাংবাদিককে অনুরোধ করছি, আপনি দয়া করে আমার বাসায় এসে দেখে যান, আমি কত বিলাসী জীবনযাপন করি।’
তিনি বলেন, ‘দিল্লী থেকে লিখে দেওয়া নিউজ করে যদি ভেবে থাকেন হাসনাত আব্দুল্লাহকে থামাতে পারবেন তাহলে আপনারা এখনও ভুলের জগতে আছেন। থামার হলে তো সেদিনই থেমে যেতাম। ক্লিন ইমেজের আওয়ামী লীগ ফেরানোর বিরুদ্ধে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একাই রুখে দাঁড়াতাম না।’
হাসনাত বলেন, ‘থামার হলে আপনাদের মতোই ভারত বা র- এদের তাবেদারি করে মন্ত্রী হওয়ার হিসাব করতাম। বিলাসিতাই যদি করতে চাইতাম তাহলে আমার এত যুদ্ধ করার দরকার ছিল না। আপনাদের সাথে মিলেমিশেই বিলাসী জীবন বেছে নিতে পারতাম। আমি সেটা করিনি এবং করবও না।’
হাসনাত আরো লিখেছেন, ‘যতই তথ্যসন্ত্রাস করেন আমি ভারত আর র-এর বিরুদ্ধে কথা বলা থামাব না। আওয়ামী লীগ ফেরানোর কোনো উদ্যোগ জীবন থাকতে সফল হতে দেব না। আমি কত বিলাসী জীবনযাপন করি সেটা সবাই জানে। আমার ব্যাংক ব্যালেন্স থেকে শুরু করে ট্যাক্স রিটার্ন সবকিছুই একসেস করা যায়। আপনারাও একসেস করতে পারতেন, কিন্তু আপনারা করেননি। চ্যালেঞ্জ করে বলছি, গতকালের মিটিংয়ে আমার এসব বিষয়ে কোনো কথায় হয়নি, প্রশ্নও হয়নি। অথচ, এত বড় মিথ্যা আমার নামে ছাপিয়ে দিলেন।’
হাসনাত এ-ও লিখেছেন, ‘আমি আবারও চ্যালেঞ্জ করছি, আমি কারও কাছ থেকে এক টাকা নিয়েছি এটা কেউ প্রমাণ করুক; যে কোনভাবে। সরকারি-বেসরকারি যেকোন গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়ায় তদন্ত হোক। আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। কিন্তু এসব মিথ্যা নিউজ করে আমাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা যাবে না।’
হাসনাত বলেছেন, ‘প্রথম আলো বারবারই এ দেশের সৎ এবং দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদদের নিয়ে মিথ্যাচার করেছে।ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে যে বা যারাই দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে, তাদেরকেই আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। আমি সেই তালিকার সর্বশেষ সংযোজন। র-এর বিরুদ্ধে পোস্ট দেওয়ার দুই দিনের মাথায় আমাকে নিয়ে এই তথ্যসন্ত্রাস কাকতালীয় হতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘এসব তথ্যসন্ত্রাস দিয়ে আমাকে থামানো যাবে না। যতদিন দেহে প্রাণ আছে আমি এই দেশে দিল্লির সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বলে যাব। তাতে আমার রাজনীতি যদি না থাকে, আমাকে যদি মাইনাস করা হয়, হোক। আমাদের মেরে না ফেলা পর্যন্ত ভারত, র আর আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আমাদের এ লড়াই অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।’